পন্ডিত উবাচ
এই যে এতটা পথ পেরিয়ে এলুম,বলুন তো কোন জায়গাটা আপনাদের সবচেয়ে প্রিয়। যদি ফিরে যেতে চান কোথায় যাবেন? আমি নিশ্চিত আপনারা শতকরা ১০০ জনই চাইবেন আবার স্কুল জীবনে ফিরে যেতে। কারন মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় তার স্কুল জীবনই আর জীবনের শ্রেষ্ঠ বন্ধুরা সব স্কুল জীবনের চৌহদ্দির মধ্যেই রয়ে গেছে।
আমার স্কুল জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় গেছে, লালবাগের নবাব বাহাদুর স্কুলের বিশাল গন্ডীর মধ্যে। আমরা সেখানে যেমন সাধারন ঘরের ছেলেরা ছিলুন তেমনি আমাদের বন্ধুরাও ছিল সব একদা নবাব উজীরের ছেলে। কত নাম করব, জামা নবাব, পাপ্পু নবাব,আলিবান,খাস মীরজাফরের উত্তরপুরুষ। এখনও ওদের পুরনো বাড়ী নেমকখারাম দেউরির কাছেই। এর মধ্যে পাপ্পু ছিল সবথেকে বদ। সব অসভ্য অসভ্য ছড়ার বিরাট ভান্ডার ছিল ওর কাছে। তার থেকে একটাও যদি আপনাদের এখন শোনাতে যায়, ফেসবুক আমাকে নির্বাসন দেবে চিরদিনের মত। বেশ মজা করে স্বপ্নের মত দিন কাটত তখন।
আজও আমি ফিরে ফিরেই লালবাগে যায়। পুরনো বন্ধুরা অনেকেই হারিয়ে গেছে। কিন্তু জামা নবাব যে এখন ছোটে নবাব মুর্শিদাবাদের একইরকম রয়ে গেছে। দিলদার, রংবাহারি। ওর সাথে দেখা হলেই ছোটবেলাটা যেন হুড়মুড়িয়ে ফিরে আসে।
স্কুলে আমার সবচেয়ে প্রিয়বন্ধু ছিল অপু আর পন্ডিত। অপু শ্যামল আর উজ্জ্বল আর জ্বলজ্বলে দুটো চোখ। অপুকে নিয়ে অনেকে গল্প আছে সে এখন বলা যাবে না। তারথেকে বরং ছোট্ট একটা গল্প নয় বরং ছোট্ট ঘটনা শুনুন। আমরা তখন লালবাগের সাহানগরে থাকতুম,কুঞ্জবুড়ীর বাড়িতে। আর পন্ডিতদের বাড়ী ছিল ঠিক আমাদের পেছনেই। আর আমাদের সামনেই থাকত তুতুন। ভারী ডাটিয়াল মেয়ে। বেণী দুলিয়ে গটমট করে হেটে যেত আমাদের সামনে দিয়ে। পাত্তাই দিত না। তবে আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ সবটাই যে ওর পথের পানে উদগ্রীব হয়ে থাকত,সেকি আর বলার কথা? আমাদের পন্ডিতও কিছু কম ছিলনা। মেধাবী,রূপবান। ওর বড্ড বেশি ক্রাশ ছিল (বাংলায় কি যেন বলে মোহগ্রস্ত হয়ত) তুতুনের উপর।আমরা বন্ধুরা মিলে বন্ধুর সাহায্যে এগিয়ে এলুম। ঠিক হল তুতুনকে চিঠি দেবে পন্ডিত। আশা যাবার পথে তুতুনের হাতে ধরিয়ে দেবে ওর আত্মসমর্পণের জবানবন্দী। তো সে চিঠি সব কাঁচা মাথার মিলিত উদ্যোগে লেখা হল। মতিঝিলের মসজিদের এক ঘরের ছাদে বসে। ওখানে তখন লোকজন কম যেত। পন্ডিতের হাতের লেখা ছিল খুব সুন্দর। ক্যালিগ্রাফির অলংকরণে লেখা হল প্রেমিক হৃদয়ের জবানবন্দি। সেই চিঠি পকেটে নিয়ে পণ্ডিত উদভ্রান্তের মত দাঁড়িয়ে থাকত তুতুনের আশা যাবার পথে। সাহসে আর কুলোত না।
তারপর কি হল আমি ঠিক জানিনা। কেউ বলে পন্ডিত চিঠিও দেবার আগেই তুতুনের হাত ধরে চুমু খেয়ে ছিল। তার উত্তর এসেছিল চড়ে। আমরা অবশ্য বিশ্বেস করিনি একেবারেই। বিশেষ করে চুমুখাবার কথাটা। কারন আমাদের মনেও এমন গোপন বাসনাই যে ছিল। তবে এরপরে কিছুদিন ওর টিকিটাও দেখিনি।
এ কাহিনির শেষটা একটু ট্রাজিকই। পন্ডিত ওর বাবা মারা যাবার পর চলে গিয়েছিল কৃষ্ণনগরের নেদেরপাড়ায়,মামার বাড়ি। ঘটনাচক্রে, তুতুনের বিয়েও হয়েছিল কৃষ্ণনগরে। দেখা হয়েছিল কোন এক শাড়ির দোকানে কোনদিন। তুতুন বড়াবড়ই বড় সপ্রতিভ। পন্ডিতের কোলে ওর ছেলেকে তুলে দিয়ে বলেছিল ' এই তোমার পন্ডিত মামা' আর নিজে শাড়ি পছন্দে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল।
বেচারি পন্ডিত!!!!
এই যে এতটা পথ পেরিয়ে এলুম,বলুন তো কোন জায়গাটা আপনাদের সবচেয়ে প্রিয়। যদি ফিরে যেতে চান কোথায় যাবেন? আমি নিশ্চিত আপনারা শতকরা ১০০ জনই চাইবেন আবার স্কুল জীবনে ফিরে যেতে। কারন মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় তার স্কুল জীবনই আর জীবনের শ্রেষ্ঠ বন্ধুরা সব স্কুল জীবনের চৌহদ্দির মধ্যেই রয়ে গেছে।
আমার স্কুল জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় গেছে, লালবাগের নবাব বাহাদুর স্কুলের বিশাল গন্ডীর মধ্যে। আমরা সেখানে যেমন সাধারন ঘরের ছেলেরা ছিলুন তেমনি আমাদের বন্ধুরাও ছিল সব একদা নবাব উজীরের ছেলে। কত নাম করব, জামা নবাব, পাপ্পু নবাব,আলিবান,খাস মীরজাফরের উত্তরপুরুষ। এখনও ওদের পুরনো বাড়ী নেমকখারাম দেউরির কাছেই। এর মধ্যে পাপ্পু ছিল সবথেকে বদ। সব অসভ্য অসভ্য ছড়ার বিরাট ভান্ডার ছিল ওর কাছে। তার থেকে একটাও যদি আপনাদের এখন শোনাতে যায়, ফেসবুক আমাকে নির্বাসন দেবে চিরদিনের মত। বেশ মজা করে স্বপ্নের মত দিন কাটত তখন।
আজও আমি ফিরে ফিরেই লালবাগে যায়। পুরনো বন্ধুরা অনেকেই হারিয়ে গেছে। কিন্তু জামা নবাব যে এখন ছোটে নবাব মুর্শিদাবাদের একইরকম রয়ে গেছে। দিলদার, রংবাহারি। ওর সাথে দেখা হলেই ছোটবেলাটা যেন হুড়মুড়িয়ে ফিরে আসে।
স্কুলে আমার সবচেয়ে প্রিয়বন্ধু ছিল অপু আর পন্ডিত। অপু শ্যামল আর উজ্জ্বল আর জ্বলজ্বলে দুটো চোখ। অপুকে নিয়ে অনেকে গল্প আছে সে এখন বলা যাবে না। তারথেকে বরং ছোট্ট একটা গল্প নয় বরং ছোট্ট ঘটনা শুনুন। আমরা তখন লালবাগের সাহানগরে থাকতুম,কুঞ্জবুড়ীর বাড়িতে। আর পন্ডিতদের বাড়ী ছিল ঠিক আমাদের পেছনেই। আর আমাদের সামনেই থাকত তুতুন। ভারী ডাটিয়াল মেয়ে। বেণী দুলিয়ে গটমট করে হেটে যেত আমাদের সামনে দিয়ে। পাত্তাই দিত না। তবে আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ সবটাই যে ওর পথের পানে উদগ্রীব হয়ে থাকত,সেকি আর বলার কথা? আমাদের পন্ডিতও কিছু কম ছিলনা। মেধাবী,রূপবান। ওর বড্ড বেশি ক্রাশ ছিল (বাংলায় কি যেন বলে মোহগ্রস্ত হয়ত) তুতুনের উপর।আমরা বন্ধুরা মিলে বন্ধুর সাহায্যে এগিয়ে এলুম। ঠিক হল তুতুনকে চিঠি দেবে পন্ডিত। আশা যাবার পথে তুতুনের হাতে ধরিয়ে দেবে ওর আত্মসমর্পণের জবানবন্দী। তো সে চিঠি সব কাঁচা মাথার মিলিত উদ্যোগে লেখা হল। মতিঝিলের মসজিদের এক ঘরের ছাদে বসে। ওখানে তখন লোকজন কম যেত। পন্ডিতের হাতের লেখা ছিল খুব সুন্দর। ক্যালিগ্রাফির অলংকরণে লেখা হল প্রেমিক হৃদয়ের জবানবন্দি। সেই চিঠি পকেটে নিয়ে পণ্ডিত উদভ্রান্তের মত দাঁড়িয়ে থাকত তুতুনের আশা যাবার পথে। সাহসে আর কুলোত না।
তারপর কি হল আমি ঠিক জানিনা। কেউ বলে পন্ডিত চিঠিও দেবার আগেই তুতুনের হাত ধরে চুমু খেয়ে ছিল। তার উত্তর এসেছিল চড়ে। আমরা অবশ্য বিশ্বেস করিনি একেবারেই। বিশেষ করে চুমুখাবার কথাটা। কারন আমাদের মনেও এমন গোপন বাসনাই যে ছিল। তবে এরপরে কিছুদিন ওর টিকিটাও দেখিনি।
এ কাহিনির শেষটা একটু ট্রাজিকই। পন্ডিত ওর বাবা মারা যাবার পর চলে গিয়েছিল কৃষ্ণনগরের নেদেরপাড়ায়,মামার বাড়ি। ঘটনাচক্রে, তুতুনের বিয়েও হয়েছিল কৃষ্ণনগরে। দেখা হয়েছিল কোন এক শাড়ির দোকানে কোনদিন। তুতুন বড়াবড়ই বড় সপ্রতিভ। পন্ডিতের কোলে ওর ছেলেকে তুলে দিয়ে বলেছিল ' এই তোমার পন্ডিত মামা' আর নিজে শাড়ি পছন্দে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল।
বেচারি পন্ডিত!!!!