গুষ্টিসুখ।
আজ অনেকদিন পরে গুষ্ঠিসুখের আনন্দ ফিরে পেলেম। আমরা যখন স্কুলে,অফুরন্ত বন্ধু আর হইচই,দুচোখ ভরা স্বপ্ন আর স্বপ্ন আর অজস্র হাতছানি। তখনই জেনেছিলেম গুষ্টিসুখ কাকে বলে। পরে সেই জানা আরও গভীর হয়েছিল সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা পড়ে।
আমাদের কৈশোরের সঙ্গী ছিল অনেকেই। তার মধ্যে একজন চে আর অন্যজন অবশ্যই মুজতবা আলি। তো এই গুষ্টিসুখের প্রথম পরিচয় মুজতবার লেখা থেকেই। গুষ্টিসুখ যে তার আগে ছিলনা, তা নয়। তবে সেটা যে গুষ্টিসুখ সেটা প্রথম বুঝলুম মুজতুবা আলির লেখা পড়েই। হাজারদুয়ারির সিঁড়িতে বসে বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে ভাগাভাগি করে সুখটান, চারুকে নিয়ে ভাগাভাগি, সে গুষ্টিসুখ হয়ত আজ আর ফিরে পাব না। তবে তাই বলে হারিয়েও তো যায়নি। তার আগে বলি চারুকে কেউ ভুল বুঝবেন না। একটা সময়ে আমাদের প্রিয় ছিল 'নষ্টনীড়ের চারুলতা আর চারমিনার সিগারেট। আমরা চারমিনার কে আদর করে বলতেম চারু। ঠিক ভুপতির মত। আমাদের আর কেউ নেই 'চারু তো আছে।' সেই কালও নেই। নেই সেই চারমিনারও। আর সেই ছেলেবেলা সে তো ছিল কোন কালীদাসের কালে।
তবুও এই বৃদ্ধ বয়সে, বৃদ্ধ বলব না, বড্ড বাজে শোনায়। আসলে পালটে পালটে নিলে, কেউ বুড়োই হয়না কোনদিনই। এই পরিণত বয়সে বন্ধুর অভাব পরেনি আজও। সেইরকম বন্ধুরা মিলে জড় হয়েছিলুম বেশ কিছুদিন বাদে। শেখর বেশ কিছুদিন বাদে আবার এলো দিল্লি থেকে। সেই উপলক্ষেই আজকের জমায়েত । জমজমাট, খাদ্যে ও পানীয়তে। তার রঙে, যদি লালের আধিক্য কেউ দেখেও থাকেন, দোষ নেবেন না প্লিজ। এতে যেটুকু গুলাল যেটুকু নেশা সব সেই পুরোন দিনকে মনে রেখেই। তেমনি নিষ্পাপ, তেমনি অমলিন। সারাটা দুপুর বেশ কাটলো গল্পে, গল্পে, এলোমেলো আর অপরিণত কথায়। আসলে আমরা কেউই তো বড় থুড়ি বুড়ো হয়নি। শেষ বলেও কি কিছু হয়? যা হয় তা রুপান্তর। মানিয়ে নিলেই বেশ ছিমছাম। মনে হয় শেষ হয়েও না হইল শেষ। বন্ধুত্তের আকর্ষন ও তেমনই। গুষ্ঠীসুখের থেকে বড় সুখ যে আর কিছু নেই। সে যে পুরোন হয়ে যাবার জড়ত্ত্বকে ধুয়ে মুছে ফেলতে পারে একনিমেষে।
No comments:
Post a Comment