লিট্টিসুন্দরী
"অভয় দাও তো বলি আমার Wish কি
এক ছটাক সোডার জলে,
পাক্কী তিন পোয়া হুইস্কী। "
সত্যি বলতে আজ আমার ইচ্ছেটা সেইরকম মোটেই নয়, একেবারে অন্যরকম। এই গরমে হুইস্কী মোটেই নয়। আজ আমার ইচ্ছেটা ফুটে উঠেছে -লাল মুচমুচে রেশমি পরোটা আর বেনারসি রাবড়ি মাখামাখি করে যেমনটি হয়, ঠিক তেমনি করে। বাকীটা ভেবে নিন। এই পরোটা যেমন তেমন নয়। এরকম পরোটা আর কাবাবের দোকান দেখতে পাবেন ইলিয়ট রোড আর রিপন স্ট্রীটের দুপারেই। তবে এই গরমে কাবাবও বাদ দিয়েছি। তার বদলে আজ আমার পসন্দ বেনারসের রাবড়ি।
বেনারসি রাবড়ির স্বাদ অনেকেই নিয়েছেন। যদি কেমন জিজ্ঞেস করি তবে হয়ত সবাই বলবেন, দারুণ, অপুর্ব ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু তাতে কি সব প্রকাশ পেল? একেবারেই নয়। তবে কেমন? বেনারসি রাবড়ি আমার বোধে হল কামনার মৃদু অগ্নিশীতল তাপে, সোহাগের সরে সরে, ভালবাসার মৃদু মন্দ মলয় সুবাসে, হৃদয়ে হাজারো ঘোড়সওয়ারের দাপাদাপি। এর সঙ্গে লাল লাল মুচমুচে পরোটা। যেন পৃথ্বীরাজ টগবগিয়ে ঘোড়ায় চড়ে এসে বেনারসি সুন্দরীকে হরণ করে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আদপে তা কি হল? একেবারেই নয়। আজ আমার টগবগানো রক্তের অনেকটা দিয়ে এসেছি ল্যাবে আমার শর্করার ঘনত্ব আরও সব সুচক মাপতে। যতক্ষণ না সে রিপোর্ট আসে ততক্ষণ কোন বাড়াবাড়িই বাড়তে দেওয়া নয়। অতএব এটা আজকে পোস্টপোন্ডই থাক। যেদিন হবে, সেদিন জানাব আপনাদের।
আজ বিষ্টু ঘোষের আখড়া থেকে বেরিয়েই বেশ ক্ষিদে পেয়ে গেল। উত্তর কলকাতার অলিতে গলিতে উত্তম সব মিষ্টান্নের আয়োজন। নতুন নন্দ, পুরোন নন্দ, খগেনের দোকান আর তেলেভাজার অনন্ত অয়োজন। কিন্তু সেখানে আমার ঢোকা বারণ। তাই আজ লিট্টিসুন্দরীতেই আত্মসমর্পণ। সুকিয়া স্টীটের মোড়ে গরম গরম লিট্টি, আলুর চোখা আর চাটনি দিয়েই ভেতরের আগুনটাকে আয়ত্বে আনলাম। একটু রাস্টিক, দেহাতী গন্ধ মাখা। কিন্তু গরম গরম বেশ লাগে। একদিন সেবা নিয়ে দেখবেন।
No comments:
Post a Comment