Sunday, 27 April 2025

 গরম যে কি নিদারুণ,  তা আজ হাড়ে হাড়ে মালুম হল। আমাদের ছোট্ট গ্রুপের বন্ধুদের আমনে সামনে হয় নি বহুদিন। আজ মুলতঃ সুজিতের অনুপ্রেরণা আর উদ্যোগে একটা আসর বসেছিল অরুণের বাড়ীতে,  নাকতলায়। মেট্রো চালু হওয়ায় আজ বহু দুরই কাছের হয়েছে। যে নাকতলা আমাদের নাগালের বাইরে ছিল তা আজ ঢিলছোড়া দুরত্বে। তবে মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত যেতেই ঘেমে নেয়ে দস্তুর। যদিও আমি কাব্যরসিক নয় তবু সব চোখা চোখা কবিতা অনর্গল মনে এল বাল্মিকীর কায়দায়। দারুণ অগ্নিবাণে রে,  পঞ্চশরে বিদ্ধ করেছ একি মোরে সন্যাসী,  এসো হে বৈশাখ এস এস ইত্যাদি ইত্যাদি। আরও সব রৌদ্রদগ্ধ কবিতা। সবই আমাদের সুরের গুরু কবিগুরুর।  যতই কষ্ট হোক, তিনি যে আমাদের তৃষ্ণার জল। আর তার শুরুও যে এই বৈশাখে৷ আর আমিও তো এসে পরেছি, এই বৈশাখেই। Accidental Prime minister  এর মত আমিও একজন by default কবি। আজ্ঞে, ভুলে যাবেন না, আমারও জন্ম বলুন,চাই আবির্ভাব, তাও এই ২৫ শে বৈশাখেই। তাই বৈশাখের এই পঞ্চ কেন শত সহস্র শর নিয়ে আমার অভিযোগ বা অনুযোগের কোন কারণই থাকতে পারে না, থাকা উচিতও নয়। 


যাক, শেষমেশ এসে তো পরলাম মাষ্টারদায়। মানে অরুণের এলাকায়। কিন্তু ওর বাড়ী যেতেও এক বিপত্তি।  হাটা লাগালাম উল্টো পথে। নাকতলার বদলে কানতলার দিকে। আমি লোকটাই এই রকম, সবসময় উল্টো পথেই হেটে চলেছি সেটা যখন বুঝলাম তখন বেশ অনেকটাই পথ পেরিয়ে এসেছি।  


অরুণের বাড়ীতে এসে অর্ভ্যথনা জানাল এলিসিয়াই। এলেসিয়া কে? কি করেই বা বলি? ওর আসল পরিচয় জানাতে, অরুণের ভারী আপত্তি। তা ছাড়া অরুণের বউ এখন দেশের বাইরে। আমেরিকায় মেয়ের বাড়ীতে।  ও বাড়ীতে একা। তাও বেশীক্ষণ দ্বন্ধ রাখা উচিৎ নয়, ভীষণই অনুচিৎ। যাচ্ছেতাই ভাবছেন নিশ্চয়ই।  তবে অরুণ ভারী ভাল ছেলে। আমি চোখ বুজে ওর ক্যারেকটার সার্টিফিকেট দিতেই পারি। এলেসিয়া আসলে একটা মেয়ে। দেশী নয়, এংলোও হতে পারে।  তবে কে ও? অরুণ আবার কুকুর বলাটা একদম পছন্দ করে না। নিরাশ হলেন? একটা রগরগে কেচ্ছার আশা করেছিলেন? এই বয়সে ওসব চিন্তা বাদ দিন। আমি অবশ্য কুকুর না বলে, সারমেয়ই বলি। এর মানে নিশ্চয়ই জানেন। না জানলে, অভিধানের পাতা উল্টোন।


এবার কেমন কাটল সারা দুপুরটা?  বিন্দাস বিন্দাস। বন্ধুসঙ্গে নরকবাসও, স্বর্গাদপী গরীয়সী।  আমরা স্বর্গ আর নরকের মধ্যে শাটল চালালাম যথারীতি।  সঙ্গে অবশ্যই ছিল চিল্ড চিল্ড বিয়ার আর অরুণের অসামান্য কালিনারি এক্সপার্টিসের অভিজ্ঞান মুর্গীর পাতলা ঝোল, রাইস আর আমের টক। দারুণ জমজমাট একটা দুপুর কাটল আজ। ১৪ বোতল বিয়ার কোথা দিয়ে যে উড়ে গেল তা কেই বা জানে। আজ বলরাম ছিল at his best. সারাক্ষণ স্ট্রেইট ব্যাটে খেলে গেল। আর যা সব জোকস বলে, তা ভেবেও কান লাল হয়ে যাবে। 


আমার কুম্ভমেলায় বিছরে যাওয়া ভাই জানে জিগর রাভিন্দার এলো দেরিতে, কিন্তু পলকেই আমাদের ওভারটেক করে গেল বিয়ারের হিসাবে। সব কথা বলা যাবে না। বলরাম লজ্জা পাবে আর ফেবুও হয়ত দেবে আমায় ব্লক করে। জানার ইচ্ছে যদি হয় তবে আমাদের ডাকুন,  অনুপান অবশ্যই  chilled Beer. আর কোন শর্ত নেই।





No comments:

Post a Comment