Wednesday, 26 March 2025

হামসফর আর শান্তিনিকেতন



হঠাৎ সফর সঙ্গে হামসফর। 


হটাৎ শান্তিনিকেতন যেতে হয়েছিল। হটাৎই। কারন বলা নেই, কওয়া নেই। কুন্তলা ধরে বসল, শান্তিনিকেতন যেতে হবে। এবং কালকেই। কারণ? কারণ, কলাভবনের শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে, কলাভবন নন্দনে বিনোদবিহারী মুখার্জীর ছবির প্রদর্শনী চলছে এবং তা প্রায় শেষের মুখে।


কুন্তলা আমার বিয়ে করা বৌ, তাই অনেকদিন একসাথে আছি। হটাৎ করে না বলতে পারি নে। যদিও আমি শিল্পী, শিল্পরসিক বা শিল্পবোদ্ধা কোনটাই নই। ছিলামও না কোনদিন। হবার ইচ্ছেও নেই। তবুও যেতে হবেই। কারন কুন্তলার ওসবে ভারী সখ। ওর রুটি রোজগারও ওই শিল্প বেচেই। কথাটা খারাপ শোনাচ্ছে না? শিল্প কি বেচার জিনিষ। মহৎ অর্থে হয়ত নয়।  তবে আজকাল সারা সংসার জুড়েই তো শুধুই বেচাকানা। শিল্পীরা দোকানদার হলেই বা ক্ষতি কি? তবে মহৎ শিল্পী বা কালোত্তীর্ণ অনেকেই তো আছেন, যাদের ছবি হয়ত তাদের জীবদ্দশায় তত বিকোয়নি কিন্তু আজ লক্ষ লক্ষ ডলার তার দাম। আমার গগ্যার কথায় মনে আসে। কি অসাধারণ প্রতিভা। কিন্তু চরম পাগলামি আর ততোধিক দারিদ্র। সমাজ সংসার ছেড়ে, নিরাপদ জীবন ফেলে, তাহিতি কন্যাদের মধ্যে জীবন যাপন। ছবি আঁকা আর তাহিতি কন্যাদের সঙ্গে 'Sex under the mango grove' Oh,what a life.


.ছবি বুঝি চাই না বুঝি।  এইরকম একটা জীবনের সাধ আমারো ছিল। এখন বুঝি তা আর সম্ভব নয়। অগত্যা শান্তিনিকেতনই সই। পল গঁগ্যা কে নিয়ে সম্ভব হলে কুরোসাওয়ার একটা ছবি আছে, পারলে দেখবেন। ছবিটার নাম 'Dream'. অনেকগুলো সর্ট ফিল্মের কম্পোজিশন।  খুব ভাল লাগবে। আমার একজন প্রিয় সাহিত্যিক সসমারসেট মম। মমও গঁগ্যার আকর্ষন কাটাতে পারেননি। ওকে নিয়ে আস্ত একটা উপন্যাসই লিখে ফেলেছেন। বলুন তো কোনটা? ' The moon and the sixpense'. এর নায়ক চার্লস স্টিকল্যান্ড, শেয়ার মার্কেটের দালাল। গঁগ্যার আদলে গড়া। হঠাৎই তার মনে হল, I am destined to be an artist.  আর তিনি সব ছেড়েছুড়ে চললেন তাহিতি দ্বীপে। এইরকম ইচ্ছে আমার অনেকবারই হয়েছে। অবশ্য শিল্পী হতে নয়। ধরূণ ভুপর্যটক হতে। কিন্তু 'Escape velocity' জোগাড় করতে পারিনি। বাঙ্গালির ছাতির জোর বড়ই কম। এই ভুপর্যটক হবার লোভ আমার রাশিয়ান গল্প/উপন্যাস পড়ে। বেলেকিনের একটা গল্প ছিল এক ভবঘুরে ছেলের এক অজানা শহরের  মেয়ের প্রেমে পরার। সে প্রেম অবশ্য পরিণতি পায়নি। সেই থেকে আমার মনের মধ্যে দানা বেঁধে আছে একটুকরো লোভ, এক মেমসাহেবকে বিয়ে। সে তো আর এই জন্মে হল না মশাই। এখন এই দিশি কালো মেমসাহেবকে নিয়ে রওনা দিই  বিনোদ বিহারীর সন্ধানে।


এবার আসল কথায় ফিরি। শান্তিনিকেতন তো পৌছে গেলাম। আর শান্তিনিকেতন আরামে ঘুরতে হলে টোটোর কোন বিকল্প নেই। পৌছে গেলাম নন্দন, কলাভবনে। বিনোদবিহারীকে অল্পবিস্তর আপনারা সবাই তো জানেন। কলাভবনের শিক্ষক ছিলেন কিছুকাল। রামকিংকর, মানিদা, মুজতুবা আলি এরা সব একবাগানের ফুল ছিলেন। আপনারা যতটুকু জানেন এদের সমন্ধে, আমি তার থেকে বেশী কিছুই জানিনা। বিনোদবিহারী সম্মন্ধে আমি প্রথম জানতে পারি, সত্যজিৎ রায়ের একটি ডকুমেন্টারি থেকে, 'The inner eye'. সে বোধহয় আশির দশকের প্রথম দিকে। ওনার দৃষ্টি খুব ক্ষীণ ছিল। পরে তো অন্ধই হয়ে যান। তা সত্বেও অদ্ভুত সব ছবি একে গেছেন। 


সেইসব ছবির ছবি তোলা বারণ। তাও আমি লুকিয়ে চুরিয়ে স্রেফ আপনাদের জন্যই কিছু ছবি তুলে এনেছি ।  এই নন্দনে কলাভবনের পঞ্চকন্যার এক প্রদর্শনী চলছিল।  তারও কিছু ছবি দিলাম।  এইসব ছবি যদি আপনাদের ভাল লাগে, তবেই আমার এই চুরি করা সার্থক। আমার এই মহাপাপের ভাগীদার হবেন তো? না আমাকে আবার বাল্মীকির মতই ডিচ করবেন?

Sunday, 23 March 2025

কালীপ্রসন্ন সিংহ


 আজ চারটে বাজতেই বেড়িয়ে পড়েছি বিশেষ এক উদ্দ্যেশ্য নিয়ে। অন্যদিন হলে উদ্যেশহীন ভাবে বেড়িয়ে পরি, উদ্যেশহীন।  অবশ্যই উত্তর কলকাতায়। আসল কলকাতা, বাবু কলকাতা। সে কলকাতার সোঁদা গন্ধ হয়, পুরনো বিবর্ণ বাড়ী ঘরদুয়ার দেখে যাদের মন খারাপ হয়, যাদের ঘাড়ের উপর বেঙ্গল রেঁনেসার চরিত্ররা ক্রমাগত নিশ্বাস ফেলে, আমি সেরকম





ভাগ্যবানদের একজন। 

আজ কেন বেড়িয়ে পরেছি, কিই বা উদ্যেশ, সে সবই বলব তার একটা পটভূমিকা আছে।আমাদের একটা ছোট্ট ক্লাব আছে, নাম তার চার ইয়ারী। মানে চার বন্ধু সমাবেশ। আমি,শিশির, জয় আর নির্মাল্য মাঝেমধ্যেই আড্ডায় বসি। উদ্যেশ অবশ্যই আড্ডা মারা।তবে আড্ডা মারতে গেলেও, পান,অনুপানের সঙ্গত লাগে, না হলে আড্ডা জমে না। পান হয় যথেষ্টই, সেটা জোগায় শিশির প্রধানত, আর নির্মাল্য।  উৎকৃষ্ট স্কচ/সিঙ্গল মল্ট। সে যায় হোক, এখানে কিন্তু পান করাটাই অনুপান তূল্য। এখানে বিষম বিশাল বৌদ্ধিক  আলোচনা হয়। নাটের গুরু শিশির, তার সাথে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দেয় নির্মাল্য।  জয় মাঝেমধ্যে from Auditors point of view মূল্যবান মতামত দেয়। তবে আসর জমে যায়। ঘড়ির কাঁটা ১০টা পেরিয়ে গেলেও, কিসিকা কই পড়েশান নেহি। আজকাল এতো এপ বেড়িয়ে গেছে, ফেরার টাক্সি পেতে কয়ি পড়েশান হোতা হি নেহি।


সে যাইহোক,  গত সেশনে ঠিক হলো পুরনো কলকাতা ঘোরা হবে। নির্মাল্য কালীপ্রসন্ন শিংহের বাড়ীর কথা তুললো। পুরনো কলকাতা আমার হাতের তালুর মত চেনা। কিন্তু কালীপ্রসন্নর বাড়ীটা চিনতাম না। তাই আজ বেড়িয়ে পড়লাম ছানবিন করতে। জোঁড়াসাকো রামমন্দিরের উলটো দিকে বানারসি ঘোষ স্ট্রীটে।  খুব সহজেই পৌছনো গেল। সে বাড়ীর অতি জরাজীর্ণ অবস্থা। চারিদিকে বটবৃক্ষ জন্মে গেছে। ভেতরে কয়েকজন দখলদার আছে। ভেতরে ঢুকতে দিল,কিন্তু ছবি তুলতে দিল না। পুরো জোঁড়াসাকো অঞ্চলটাই অবাঙালী দখলে। এককালে বাঙালী সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু আজ বেদখল। বাঙালী যে আত্মবিস্মৃত জাতি, তাতে কোন সন্দেহ নেই। কালীপ্রসন্নর বাড়ীটা শুনেছি ফার্স্ট ক্লাস হেরিটেজ তকমা পাওয়া।  কিন্তু না বাড়ীর গায়ে আছে কোন Plaque  না কোন রক্ষণাবেক্ষণ।  কালীপ্রসন্ন সিংহ সম্মন্ধে আপনারা কমবেশি সবাই জানেন। তার উদ্যোগে ও অর্থানুকুল্যে মূল সংস্কৃত থেকে মহাভারতের বাংলায় অনুবাদ করা হয়। স্বয়ং বিদ্যাসাগর মহাশয় রাজী হয়েছিলেন সেই মহাভারতের সম্পাদনার ভার। কালীপ্রসন্ন সিংহ আরো এক কারণে বিখ্যাত।  তিনি লিখেছিলেন ' হুতোম পেঁচার নকশা'।  এক বিশেষ ধরণের গদ্যরীতির প্রচলন করেছিলেন।  কিন্তু মাত্র ২৯ বছর বয়সে তিনি মারা যান।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের 'সেই সময়' মাষ্টারপিসে তার বিশেষ উল্লেখ আছে। উপন্যাসে তিনি নবীনকুমার। এক বর্ণময় চরিত্র। উপন্যাসে বিবৃত তার পিতৃবন্ধু বিধুশেখর তার জন্মদাতা পিতা। কারণ তার সামাজিক পিতার সময় কেটে যেত, রাঁড়ের বাড়ীতে। যা সেই সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ছিল। ওটাই ছিল বাবুকালচার,  পায়রা  ওড়ানো আর গহরজান, নিকি বাঈজীদের পেছনে লাখ লাখ টাকা উড়ানো।

কালিপ্রাসন্ন সিংহের বাড়ী দেখা হয়ে গেলো। মিশন একোমপ্লিশড। এবার বিলে মানে বিবেকানন্দের বাড়ী বাঁয়ে রেখে এগিয়ে চলা, নকুড়ের দোকান পড়ল পথে, উপেক্ষা করলাম। হরিঘোষ স্ট্রীট পেরিয়ে এসে গেলাম শ এর তেলেভাজার দোকানে। মোটা মোটা ধোঁকা কিনলাম।  কাল ডালনা হবে। আপনারা কেউ ধোঁকা খেয়েছেন, সুন্দরীদের  কাছে? আমার সেই ধোঁকা খাওয়ার কোন মুহরতই তৈরী হয়নি। তাও কুন্তলা এখনও সন্দেহ করে। আরে বাবা, আগে যখন দেবদূতের মতো চেহারা ছিল, তখনই কিছু করিনি, আর এখন এক পা নিমতলায় রেখে কি প্রেম হয়? হ্যায় কোয়ি? 

যাকগে, এর ফাঁকে দেখি একদল সুন্দরী বসন্তের গান গাইতে গাইতে যাচ্ছে শোভাযাত্রা করে। দেখলাম কিছুক্ষণ।  ছবিও তুলেছি, দেব এরসাথে।


আমি এখন দর্জিপাড়ায় জয়ন্তের সাথে গল্প করছি। এক কানে জয়ন্তের কথা শুনছি, টুকটাক হ্যাঁ হুঁ করছি, আর এক আঙুলে, এক মনে আপনাদের জন্যে ভাটকথা লিখছি। তার মানে আমার মন দুটো ফিল্ডে কাজ করছে একইসময়ে। এটা আমার বিশেষ গুণ। অবশ্য এটা আয়ত্ব করতে দীর্ঘ সাধনার দরকার। দুহাত এজসাথে কাজ করলে সে হয় সব্যসাচী আর আমার মন যে একসাথে দুজায়গায়, খেপ খাঁটে, আমি তাহলে কি? নিশ্চয় স্পেশাল কিছু????

Saturday, 22 March 2025

গুষ্টিসুখ

 গুষ্টিসুখ।


আজ অনেকদিন পরে গুষ্ঠিসুখের আনন্দ ফিরে পেলেম। আমরা যখন স্কুলে,অফুরন্ত বন্ধু আর  হইচই,দুচোখ ভরা স্বপ্ন আর স্বপ্ন আর অজস্র হাতছানি। তখনই জেনেছিলেম গুষ্টিসুখ কাকে বলে। পরে সেই জানা আরও গভীর হয়েছিল সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা পড়ে। 


আমাদের কৈশোরের সঙ্গী ছিল অনেকেই। তার মধ্যে  একজন সর্বকালের সেরা বিপ্লবী চে আর অন্যজন অবশ্যই মুজতবা আলি। তো এই গুষ্টিসুখের প্রথম পরিচয় পাই, মুজতবার লেখা থেকেই। গুষ্টিসুখ যে তার আগে ছিলনা,  তা নয়। তবে সেটা যে গুষ্টিসুখ সেটা প্রথম বুঝলুম মুজতুবা আলি পড়েই।  হাজারদুয়ারির সিঁড়িতে বসে বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে বিড়ি খাওয়া বা চারুকে নিয়ে ভাগাভাগি, সে গুষ্টিসুখ হয়ত আজ আর ফিরে পাব না। তবে তাই বলে হারিয়েও যায়নি।  তার আগে বলি চারুকে কেউ ভুল বুঝবেন না। একটা সময়ে আমাদের প্রিয় ছিল 'নষ্টনীড়ের চারুলতা আর চারমিনার সিগারেট।  আমরা চারমিনার কে আদর করে বলতেম চারু। ঠিক ভুপতির মতই। আমাদের আর কেউ নেই 'চারু তো আছে।' সেই কালও নেই, নেই সেই চারমিনারও। আর সেই 'ছেলেবেলা' সে তো ছিল কোন কালীদাসের কালে।


তবুও এই বৃদ্ধ বয়সে, বুড়ো বলব না, বড্ড বাজে শোনায়। আসলে পালটে পালটে নিলে, কেউ বুড়োই হয়না কোনদিনই। তাই, এই পরিণত বয়সে বন্ধুর অভাব পরেনি আজও। আর আজ সেইরকমই বন্ধুরা মিলে জড়ো হয়েছিলুম বেশ কিছুকাল বাদে। শেখর বেশ কিছুদিন বাদে আবার ফিরে এল দিল্লি থেকে। সেই উপলক্ষেই আজকের জমায়েত ।  জমজমাট, খাদ্যে ও পানীয়তে। তার রঙে, যদি লালের আধিক্য কেউ দেখেও থাকেন, দোষ দেবেন না প্লিজ।  এতে যেটুকু গুলাল যেটুকু নাশা, নাশা... সব সেই পুরোন দিনকে মনে রেখেই। তেমনি নিষ্পাপ, তেমনি অমলিন।  সারাটা দুপুর বেশ কাটলো খোশ গল্প আর তিন পাত্তিতে, এলোমেলো আর অপরিণত কথায়। আসলে আমরা কেউই তো বড় থুড়ি বুড়ো হয়নি। শেষ বলে কিছু হয় নাকি? শেষের পরেই তো আবার শুরু, শেষ হয়েও না হইল শেষ। বন্ধুত্ত্বের আকর্ষন যে তেমনই। গুষ্ঠীসুখের থেকে বড় সুখ আর কিছু নেই। সে যে পুরোন হয়ে যাবার সব জড়ত্ত্বকে মুছে ফেলতে পারে একনিমেষে।

Friday, 21 March 2025

রেলী নদীর ধারে

 সুখস্মৃতি

আগে কেমন সুন্দর দিন কাটাইতাম


এসে গেছি রেলি। চারিদিকে পাহাড়। মাঝখানে ছোট্ট একটা ভ্যালী। আর ভ্যালীর পাশ দিয়ে গেছে ছোট্ট একটা পাহাড়ী নদী। সেই নদীর নামও রেলী। এখন শীতের শেষে সেই নদীতে জল নেই  বিশেষ। মাঝে মাঝে তিরতিরে একটা ধারা দেখা যায় সেই নদীর কোথাও কোথাও।  আশেপাশে লোকালয় খুব কিছু নেই। নেই দোকান বাজারও। নেই যে সেটা লাঞ্চের টেবিলে বসেই বোঝা গেল। আমাদের ১৭ জনের টিমের খোরপোষ তো কম নয়। তাই রিসোর্টের বাচ্চা দুটো মেয়ের আমাদের খাবারের জোগান দিতে প্রাণান্ত। আজ লাঞ্চে সামান্যই মেনু। ভাত, ডাল, আলুভাজা আর চিকেন। মাঝপথে আলুভাজাও শেষ। কি করবে বেচারীরা? ধারেপিঠে দোকানও নেই, যে দৌড়ে গিয়ে নিয়ে আসবে। তবে আমদের গ্রুপের ছেলেরা ভারি এডজাস্টিং নেচারের। এসব নিয়ে কারুর কোন অভিযোগও নেই। রাত্রে শুনেছি সেই বিখ্যাত ডিম্ভাত। আলু নেই। তাই শুধুই ডিম। কাল কি হবে জানি না। হবে নিশ্চয় কিছু। ননী যখন আমাদের মুখিয়া। তখন সবই হয়ে যাবে। আমাদের আকর্ষন অবশ্য এইসব সামান্য ব্যাপারে মোটেই সীমাবদ্ধ নয়। তরল রঙীন পানীয়ের সুপ্রচুর আয়োজন। রেলী নদীতে জলের অভাব হতে পারে, কিন্তু ননীর ওয়াটার অফ ইন্ডিয়ার অশেষ আয়োজন।  এই আছে আর নেইয়ের মধ্যে দুটো দিন বেশ কেটে যাবে। এই পাহাড়, অরণ্য, শুদ্ধ বাতাস আর মনে পুলক আর বড়িয়া যাম থাকলে, কিসেরই বা অভাব আর কিসেরই বা প্রয়োজন? 

রেলীর পরেই দুটো দিন বড়া মাঙ্গুয়ায়। সেখানেই দোলের বিশেষ আয়োজন। সে এক বিশেষ বাৎসারিক উৎসব। বলে বোঝানো না মুনকিন। তবে উড়বে ফাগ, যে সে ফাগ নয়, অর্গানিক আবীর। আর খানাপিনার দেদার আয়োজন। সব থরে থরে সাজানো আছে। সঙ্গে ভদ্রেশ্বরের ফেলু মোদকের রকমারি সন্দেশও।














Sunday, 16 March 2025

 আজকের সকালটা বেশ প্লেসেন্ট। প্লেসেন্টের বাংলা যে ঠিক কি, তা জানিনা। হয়ত বলরাম জানে। আমাদের বড়ভাই তো, সব জানে।  প্লেসেন্ট বা মধুর যাইহোক বেশ ঠান্ডি ঠান্ডি হাওয়া।  চারিদিকে কোকিলের ডাক শুধু কুহু কুহু করে। এখন আশেপাশে প্রচুর কোকিলের আনাগোনা।  কি জানি মোদির কিনা? সারাক্ষন আচ্ছে দিনের গান গেয়ে চলেছে। সে যাই হোক,বেশ রোমান্টিক এটমস্ফেয়ার কিন্তু। যাই বলুন আর তাই বলুন বেশ লাগে। বয়স যায় হোক,ভাল লাগাতে কোন বাঁধা তো নেই? তাই বেশ শরীফ মেজাজে বহুক্ষণ দৌড়াদৌড়ি করলুম লেকে। বেশ জোঁশ এসে গেল। মনে এলো নানা চিন্তা। সেই কবে কাশ্মীরে রোগন জোশ খেয়েছিলুম তার স্বাদ টা বেশ তালু ছাড়িয়ে সারা তনমন কে কেমন আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। আমি যে খুব খাইয়ে তা অবশ্যি নয়, তবে সমঝদারী আমাদের রক্তে। এটা মানতেই হবে। আজ অবশ্য রোগন জোশ পাওয়া যাবে না। আর পেলেও সে পঁহেলগাও তো পাবোনা, তাই রোগন জোস আজ থাক তোলা। হবে'খন একদিন।


গত পরশু আমাদের ভি আই পি বাজারের কালা একটা বিরাট বাংলাদেশী ইলিশ গছিয়ে দিয়েছিল। ওকে এড়ান মুশকিল।  শুরুই করবে দাদা আপনার জন্যে জলের দাম। সে জলের দাম শুনে আঁতকে উঠতে হয়। যাইহোক সাহস দেখিয়ে কিনেই ফেলেছিলুম। তবে এটাও ঠিক কালা দাম নিলেও, দরের জিনিস দেয়। কোন কমপ্লেন করাই যাবে না৷ এতই দিলখুশ স্বাদ ছিল সে ইলিশের।  


 ফেরার পথে পড়ল কাদাপাড়া বাজার। সেখানে নিলাম ফনফনে পুঁই শাক, কুমড়ো আর বেগুন আর ঝাড়াঝাপটা বাটা মাছ। মেনুও ঠিক করে নিয়েছি। আজ ইলিশের মাথা দিয়ে পুইশাক, কলাইয়ের ডাল বেগুন দিয়ে, হিং আর মৌরীর হাল্কা গন্ধ মাখা। খাস মুর্শিদাবাদী রেসিপি।আর বাটা মাছের ঝাল। আর অবশ্যই আমের পাতলা টক বা অম্বল যাই বলুন। শেষ পাতে একটু লালদই খেতেও পারি৷ 


 তবে যাই খাই না কেন খাব অল্প। কিঁউ কি, বিন্দুতে সিন্ধুর আস্বাদ নিতে আমি বেশ জানি। সেও কিন্তু যোগেরই এক অঙ্গ।  চেষ্টা করুন, আপনিও পারবেন৷ 


বাকী রয়ে গেল রোগন জোশ। সেও হবে পঁহেলগাও তে গিয়েই৷সেপ্টেম্বরে কাশ্মীর যাবার টিকিট কাটা হয়ে গেছে।  ফেরার পথে পঁহেলগাও দিন তিনেক। আর পঁহেলগাওর রোগন জোস মানেই দিলখোশ।

Tuesday, 11 March 2025

বসন্তোউৎসব

 বসন্তোৎসব 










আজ রাজামশাইয়ের ডাক ছিল শোভাবাজার রাজবাড়ীর বসন্তোৎসবে যাবার৷ প্রতিবারই যাই। মাঝে অবশ্য দু'বছর বন্ধ ছিল কোভিডকে লিয়ে৷ তবে এবার না হওয়ার কোন কারণ ছিল না। আর হয়েছেও। তবে  বোধহয় যথেষ্ট প্রস্তুতি ছিল না তাই হয়েছে একটু এলেমেলো। যাই হোক, রঙ ছিল যৌবন ছিল, ছিল তার উচ্ছাসও। বসন্তে এর থেকে আর কিই বা বেশী দরকার।  ফানুস উড়ল,  আবীর উড়ল, উড়ে পড়ল আবেগ । সে খবরে আমাদের কিই বা দরকার। তবে বেশ আমোদ হলো৷ তিনটে ঘন্টা নিমেষে গেল কেটে।


এরপর আমার গন্তব্য আর কোথায় বা হতে পারে৷ আছে এক জায়গা৷ সে হলো দর্জীপাড়া৷ নতুনদার কাছে। ঘন্টা দুয়েক চুটিয়ে আড্ডা।  তারপর,  ঠাকুরবাড়ী। এ পাড়ায় মোড়ে মোড়ে পারিবারিক সব মন্দির। তার নিত্য পূজা, নিত্য আরতি৷ সেরকমই এক মন্দিরে ঢুকে পড়লাম।  আমি অবশ্য অবিশ্বাসীর দলে। তাই মাথা আর ঝোঁকায় নি। ঘাড় টেঁড়া করেই বেশ উপভোগ করলাম। অবিশ্বাসী হতে পারি, তবে এই বিশ্বাসের রুপটাও দূর থেকে দেখতে বেশ লাগে।  সে আরতির একটা ভিডিও দিয়েছি এর সাথে৷ 


এরপর কি? এবার শাউওয়ের তেলেভাজার  দোকানে। নেতাজী নাকি এখানে চপ খেতেন? এরা অবশ্য ২৩ এ জানুয়ারি বিনে পয়সায় তেলেভাজা বিলি করে। এখানেই ধোঁকা কিনলাম বড় বড় মোটাসোটা। কাল ধোঁকার ডালনা খাব। বসন্ত উৎসবের পর ধোঁকা কি এন্টি ক্লাইমাক্স লাগছে? লাগুক কিন্তু I simply love Dhonkar Dalona.ধোঁকা আজ পর্যন্ত কেউ অবশ্য আমাকে দেয়নি।  I swear. আপনি যদি জীবনে ধোঁকা খেয়ে থাকেন, সে দায়িত্ব আপনারই৷ কেই বা সে দায়িত্ব নেবে?


এবার ফেরার পেলা৷ আমার পছন্দের যান বলুন বা বাহন, সে হচ্ছে হন্টন৷ সেই রাজা নবকৃষ্ণ রোড ধরে, হরি ঘোষ স্ট্রিট দিয়ে, দর্জীপাড়া ঘুরে, গোয়াবাগান,  রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিট দিয়ে, মানিকতলা, কাঁকুড়গাছি পেরিয়ে হেঁটে হেঁটেই একেলা একেলা চলা। জীবনের মরণের পথে যে একেলা একেলাই হাঁটতে হয়, তা কি কারুর অজানা?

Friday, 7 March 2025

ননীগোপালের রাস বনাম করোনার ত্রাস

 করোনার ত্রাস

বনাম

ননীগোপালের রাস


সারা দেশ কেন গোটা জগৎ জুড়েই হইহই।করোনা আর করোনা। কে হবে জয়ী? সেটা আপনারাই দেখুন। আজই ননীগোপালের দলের জনা বিশেক তল্পিতল্পা বেঁধে চললেম উত্তরে দোল খেলতে। 

সবরকমের প্রিকশান নিয়ে, যেমন আমাদের ডায়েবেটিক এসোসিয়েশনের সভাপতি সুজিত আসছে ভবানীপুর থেকে গুলি সন্দেশ নিয়ে। গুলি শুনেই বোঝা যাচ্ছে সুজিত হাইলি এটাকিং মুডে আছে। ছোড়েঙ্গে নেহি কিসিকো। ১৫০ পিস কম হবে? আরে গোলাও তো আসবে ভদ্রেশর, চন্নননগর থেকে। সুর্য মোদকের জলভরা।  সে কি তার সাইজ। এসব ব্যাপারে অশোক ঢালি ভেরী আনপ্রেডিক্টেবল। নতুন নতুন  চমক দেবার জন্যে তৈরি সবসময়। কি কি যে করবে খোদায় মালুম।  যেমন যেমন দেখব, ঠিক জানিয়ে দেব আপনাদের। 


কোথায় যাচ্ছি বলিনি তো? ভারী সুন্দর জায়গা সে সব। মিরিক, তাবোকোশি আর সাংশের। তার কিছু ছবি থাকছে সঙ্গে। ওখানেই এবারের দোলযাত্রা।  তবে ফুলের রঙে রঙীন হবে সবাই। করোনার ভয় আমরা করছিনে। কারন করোনার স্যানিটাইজার বেরিয়ে গেছে। জানেন নিশ্চয়ই।  আমাদের সঙ্গেই এনজিপিতে গাড়ীতে উঠবে ক্রেট ক্রেট হুইস্কির বোতল।চীনে নয় সব খাঁটি স্কচ।  ভেতর বাইরে সব ধুয়ে দেবে। করোনা তো যাবেই তার সঙ্গে আপনার মনের গোপনে যদি কোন দুঃখ, ব্যর্থ প্রেমের জ্বালা আজও না জুড়িয়ে থাকে, তাও যাবে সাফ হয়ে।  সব পুরনো সব মলিনতা মুছে পাবেন তাজগী ভরা সদাবাহার দিলখুশ জিন্দেগী এই বসন্ত উৎসবেই। বসন্ত তো এসেই গেছে। আশেপাশে যত ফুলকুমারীরাই ফুটে উঠুক না কেন। পাণী পীড়নের চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন। দুরত্ব রেখেই নমস্কার বিনিময় করুন। আদাব আরজও করতে পারেন। ভালো থাকবেন সবাই। হ্যাপি হোলি। 😍😍😍😇😃😁

Thursday, 6 March 2025

চার ইয়ারী






 এক বাঁও মেলে না, দো বাঁও মেলে না,  তিন বাঁও মেলে না.... শেষে কত বাঁও মেলেনি,  তা আমরা কেউই জানি না। মনে আছে রবি ঠাকুরের এই গল্পের কথা? ফটিক শেষ বাঁওয়ের আর খবর জানতে পারে নি। কিন্তু আমরা?  আমরা মানে আমরা চারজন, মানে আমি, শিশির, নির্মাল্য আর জয়, এসবিআইয়ের এই চারজন যত অতলেই নামি না কেন, ঠিক ভেসে উঠেছি। ফটিকের মত, অতলে তলিয়ে যায়নি। আজকের এই ত্রৈমাসিক সম্মেলনের হোস্ট ছিল, জয়। ভেনু সেই একই শিশিরের ঝিলপারের ভদ্রাসন। একটাই যোগসুত্র আমাদের সেই আদি আর অকৃত্তিম SBI. আর স্টেট ব্যাঙ্ক মানে কে না জানে It stands for excellence.  আজকের এই মিট ছিলো ভারি বুদ্ধি বৃত্তিক। হরেক বিষয়ের আলোচনা আর মতবিরোধ।সেটাই স্বাভাবিক।  আর এটা আমাদের আলোচনায় কোন বিরোধ ঘটায় না। চলতেই থাকে। যুক্তি, পাল্টাযুক্তি আর গ্লাস পে গ্লাস। যারে কয় গ্লাসনস্ত। শিশিরের মন্দির শিল্প থেকে অষ্টম রিপু। অষ্টম রিপুর কথা শুনেছেন কোনদিন?  আমাদের মান্যবর বন্ধু যেমন মন্দির শিল্পের প্রবক্তা তেমনিই এই অষ্টম রিপুরও।  যদি জানতে চান আরো বিশদে, তবে যোগ দিন আমাদের সাথে এই তরল বন্ধুত্বপূর্ণ আড্ডায়।আপনার বেম্মহজ্ঞান হবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারেন। ৬ টার আসরের সমাপ্তি হলো ১০-৩০! তারপর আর কি? জয় চলে গেল তার ভটভটিতে। এস ইউসাল হেল এন্ড হার্টি। আমি আর নির্মাল্য স্বরণ করলুম ওলার। ডরিয়ে মত।  কোন বাঁওই আমাদের তলে নিয়ে যেতে পারবে না। ঠিক ভেসে উঠবো। আমাদের খানদান আবার কি? স্রোতের শ্যাওলা। অজেয় অক্ষয়।

Monday, 3 March 2025

লালন








 উঁহু, যা ভাবছেন তা নয়। মাথায় ক্যাপ পরে একে মনে হতে পারে ডক্টর দেবী শেঠীর ছোট ভাই। কিন্তু আদতে লালন অন্য পরিবেশের মানুষ।  লালনের জন্ম এক দরিদ্র মুসলমান পরিবারে।  লালবাগে কাটরা মসজিদের পেছনে কাপাসডাঙ্গা গ্রামে লালনের জন্ম। জীবন শুরু খুব সামান্য কাজ দিয়েই,কারণ শিক্ষার জোর বা অর্থবল কোনটাই তার পেছনে ছিল না। তার কাজের শুরু রাজমিস্ত্রির সামান্য জোগাড়ে হিসেবে।  কিন্তু তার একটাই গুণ, যে কাজই করেছে, সে করেছে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে। কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হয়ত তার নেই, কিন্তু জীবনের কোন শিক্ষাই সে অবহেলা করেনি। ছিল জোগাড়ে, হল রাজমিস্ত্রী।  তারপর,  কলকাতা ডকে কেটে গেল কয়েকটা বছর। সেখানে সে পরে গেল এক ফিল্ম প্রোডিউসারের চোখে। তার সাথে কাটল বেশ কয়েকটা বছর। সিরিয়াল,ফিল্ম, সর্ট ফিল্মেও সচ্ছন্দে কাজ করল। তার ব্যবহারের গুণে বহু নামীদামি অভিনেতা, অভিনেত্রীর কাছের মানুষ হয়ে উঠল।


কিন্তু  বাবার মৃত্যুর পর, সংসারের প্রয়োজনে ফিরেও এল লালবাগে। কাজ নিল সাগ্নিক হোটেলে৷ সামান্য হোটেল বয় থেকে হয়ে উঠল, সাগ্নিকের ক্যাটারিং ইনচার্জ। পাক্কা রসুইকার। তার রন্ধনশৈলির জাদুতে, সাগ্নিকের সুনাম আজ চারিদিকে । আমি বেশ কয়েক বছর থেকেই লালনকে চিনি। তার বিবর্তন আমাকে মুগ্ধ করে।  এত সহজ ও সুন্দরভাবে লালন জীবনের শিক্ষাকে আয়ত্ত্ব করেছে,যা তার ব্যক্তিগত জীবনকেও মহিমান্বিত করেছে।  দুই বোনের বিয়ে, ভাইদের প্রতিষ্ঠিত করা,কোনটাতেই  কোন ত্রুটি রাখেনি। আজ তার বিরাট বাড়ি।  সুন্দরী বউ। আমবাগান।  আমার নেমন্তন্ন এবার ওর বাড়িতে আম খাবার। আমি তো আসবই। আপনারাও আমার সঙ্গী হতে পারেন।

বিলে

 বিলে


আজ সকাল সকাল যেতে হয়েছিল বিষ্টু ঘোষের পাড়ায়। কি দরকারে সেটা না হয় নাই বললাম। আর সবকিছুই যে ঢেরা পিটিয়ে বলতে হবে এমন পেটপাদলা আমি নয়। আর সে সব শুনেও আপনাদের এমন কিছু বেম্মজ্ঞান হবেনি। আখড়ার কাছেই বিলের সাথে দেখা। বিলে কে চেনেনা এ তল্লাটে এমন কেউ নেই। বিরাট শিশু বলতে যা বোঝায় তাই। যেমন বিশাল দেহ তার তেমনি বিশাল মন। একদমই অল্প বয়স।  তবে এ পৃথিবীতে বিলে জানেনা বা চেনেনা এমন জিনিস নেই। যেখানে গপ্পের গন্ধ পাবে, বিলে ঠিক সেঁধিয়ে যাবে। তখন তাকে নড়াই কার সাধ্যি। মোহনবাগান অন্ত প্রান৷ ক্লাবের দুঃখে বিলের চোখ দিয়ে জল গড়ায়। খাঁটি ঘটির বাচ্চা। ক্লাবের হয়ে




জান লড়িয়ে দেবে। যেখানে মো'নবাগান সেখানেই বিলে হাজির সে শিলিগুড়ি হোক বা চেন্নাইই। সেই বিলের বড় দুঃখ।  কবে বিএ পাস দিয়েছে আজ পর্যন্ত একটা ভদ্রস্থ চাকরি জুটল না। যে কথা বলছিলাম।  বিলে ধরল গে ঠিক শ্রীমাণির বাজারের মুখটাতে। ও আমাকে জ্যেঠু বলে ডাকে। বলল জ্যেঠু, শুনেছ, শম্ভু কাকা তোমায় কিছু বলেছে? আমি বলি না তো রে বিলে,কি হয়েছে? বলে  বলেনি? তাহলে থাক, জানলে শম্ভু কাকা আমার উপর রাগ করবে। আমি বলি বলে ফেল না আমি আর শম্ভুকাকা কি কিছু আলাদা। এক মুহুর্তেই বিলে সব উগরে দিল ওর ক্ষোভ দুঃখের কথা। শম্ভুকাকা যে কাজটা ওকে যোগাড় করে দিয়েছে, সেটা ওর মোটেই পছন্দ নয়। ও তাই ঠিক করেছে, চাগরীটা ছেড়েই দেবে। 

আপনারা শুনলেন তো বিলের কথা। ভারী ভাল,সরল, সৎ ছেলে। দেখুন না যদি ওর জন্যে ভদ্রস্থ কিছু চাকরীর জোগাড় হয়। আমার অনুরোধ রইল। 


বিলের সাথে গপ্পে কেটে গেল অনেকটা সময়। একটু মার্কেটিংও করলাম, জানেন। বিরাট কিছু নয়। আমার পছন্দের ধুলো শাক,সজনের ফুল আর মাছের মধ্যে কাঁচকি আর ফলি। আমার বাজারের সওদা শুনে জানি অনেকেই মৃদু মৃদু হাসবেন। হাসুন। তাতে আমার বয়েই গেল। আমার আজকের মেনু সজনে ফুলের বড়া,ধুলোর শাক, কাচকি র চচ্চড়ি আর বড়ি দিয়ে ফলি মাছের ঝোল। ইচ্ছেটা পেশ করলাম। জানিনা শেষ পর্যন্ত পাতে পড়বে কিনা।