দ্বন্ধমূলক বস্তুবাদ
এ বড় ঘাবড়ে যাওয়ার মতই বিষয়। বিশেষ করে আমার, আপনার মত আম আদমীদের কাছে। তবে আমি যদি বলি এই বস্তুবাদ আপনার ঘরেই মজুত, তাহলে বড় ধন্দে পরে যাবেন। খুজে খুজে হাল্লাস হয়ে যাবেন কিন্তু ধরতে পারবেন না। " তারে ধরি ধরি মনে করি, ধরতে গেলে আর মিলে না..." তবে মিলবে মিলবে নিশ্চয়ই যদি থাকে প্রেম আর নিষ্ঠা।
তবে, এই বস্তুবাদের সাথে আমার মোলাকাত নয় মোকালাত ছোটবেলা থেকেই। সেই সময় সিপিএম, নকশাল আর মারক্সবাদের জয়জয়কার। আমাকেও ক্লাস নাইনে থাকতেই, ছাত্র ফেডারেশনে মেম্বার করে নিল তুষার। তুষার আর তরূণ সিপিএম বাড়ীর দুভাই। ভারী একবগগা আর কি বলে নিবেদিত প্রাণ ছিল এইসব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে। লালবাগে রতনপুর পাড়ায় ওদের বাড়ী। প্রতি রোববার ক্লাস বসত সেখানে। তুষার বলত আমাদের মতামত চাইত আমাদের চটি চটি বই দিত পড়ার জন্য, সবই মারক্সবাদের উপর। তো এইরকম এক ক্লাসে আমি জিজ্ঞেস করে বসলুম, "কমরেড ( বলতে ভারী ভালো লাগত, মনে হত যুদ্ধে যাচ্ছি) দ্বন্ধমূলক বস্তুবাদ কি?" তুষার এই বেমক্কা প্রশ্নবানে ভারী বিব্রত হয়ে পরল। ভাবতেও পারেনি এইরকমভাবে ওকে বিদ্ধ হতে হবে। আর তখন ওরই বা কত বয়স। আমাকে আড়ালে ডেকে বলল, জেনে বলবে। যা হোক পরে আর ওর অবসর হয়নি জানার বা জানাবার। তবে দুভাই ওদের রাজনৈতিক নিষ্ঠা নিয়ে একনিষ্ঠ থেকে গেছে আজও। তুষার বোধহয় পরবর্তীতে বুদ্ধদেব বসুর ঘনিষ্ট জনদের একজন হয়ে উঠেছিল আর তরুণের সাথে দুএক বছর আগে লালবাগে দেখা হয়েছিল। তখন ও লালবাগ মহকুমার সিপিএমের সম্পাদক। দুভাইই ভারী সরল সোজা। সেই অর্থে ওদের কোন ক্যারিয়ারই গড়ে ওঠেনি।
সিপিএমের কথাই যখন উঠল, আর একটু বলি। কৃষ্ণনাথ কলেজে পড়ার সময় আমাদের সন্ধ্যের অনেকটাই কাটত বহরমপুর সিপিএম অফিসের সন্ধ্যের আড্ডায়। প্রভাত দা, পল্টুদা আরো তাবড় তাবড় নেতাদের সঙ্গে আড্ডা হত। ভারী নির্ভেজাল চরিত্রের সহজ,সরল মানুষ ছিলেন এরা। আমাদের মত বাল্যখিল্যদের সঙ্গে আমাদের মত করেই মিশতেন। নেতা সুলভ কোন গুমর ছিলনা। এদের মধ্যে পল্টু বোস ছিলেন সবথেকে মাই ডিয়ার লোক। পুরু পাওয়ারের চশমাপরা তার চোখের দিকে তাকালে মনে হবে ভারী রাশভারি লোক। কিন্তু স্বভাবে শিশু। চুনট করা ধুতী, গিলে করা পাঞ্জাবি ছিল তার রোজকার পোশাক। ভারী ধোপদুরস্ত আর সৌখিন। পলটু বোসকে অনেকেই হয়ত চিনবেন। একসময় ইস্টবেঙ্গলের গোলকীপার ছিলেন। পা ভেঙ্গে যাওয়ায় খেলা ছেড়ে দেন। তার দুটো প্রিয় জিনিস ছিল, মতি সাবান আর রাধারঘাটের ভগবানের দোকানের বিড়ি। ভগবানে বিশ্বাসী না হয়েও, ভগবানের বিড়িতে তার মতি ছিল স্থির। তো এইসব রংবেরঙের মানুষজনের সঙ্গে একসময় আড্ডা মেরে কাটিয়েছি ভেবেও আজ আনন্দ জাগে।
এইযে এত কথা বললাম এর মধ্যে আসল কথাটাই অধরা থেকে গেল। দ্বন্ধমূলক বস্তুবাদ? অবশ্য গুগল খুললেই বস্তুবাদের পুরো অভিধান খুলে যাবে তার মধ্যে দ্বন্ধমূলক, ঐতিহাসিক, শ্রেণীদ্বন্ধ, বিপ্লব সবকিছুরই চটজলদি সুত্র পেয়ে যাবেন। বুঝলে বুঝবেন না বুঝলেও কোন চাপ নেই।
তবে আগেই বলেছি এই দ্বন্ধের জিতে জাতা সবুদ তো আপনার হাতের কাছেই। যাকে নিয়ে অনেক বার্ষিকী, রৌপ হয়ত সুবর্ন জয়ন্তীও পালন করেছেন। মনে কি হয়নি তাকে মূর্তিমতী দ্বন্ধময়ী বলে? তিনি ভীষণ বাস্তব আর? আর কিছু বলার সাহসই নেই আপনার। দ্বন্দ্বমূলক হলেও এই বস্তুটিকে মেনে নিতেই হবে। না নিলে আপনি আচল। দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আসলে এগিয়ে চলার মন্ত্র। দ্বন্ধের মধ্যেই জীবন আর সেই জীবন এগিয়ে নিয়ে চলার সারথি আপনার দ্বন্ধময়ী। একান্তভাবেই আপনার। 😀😁😀
এ বড় ঘাবড়ে যাওয়ার মতই বিষয়। বিশেষ করে আমার, আপনার মত আম আদমীদের কাছে। তবে আমি যদি বলি এই বস্তুবাদ আপনার ঘরেই মজুত, তাহলে বড় ধন্দে পরে যাবেন। খুজে খুজে হাল্লাস হয়ে যাবেন কিন্তু ধরতে পারবেন না। " তারে ধরি ধরি মনে করি, ধরতে গেলে আর মিলে না..." তবে মিলবে মিলবে নিশ্চয়ই যদি থাকে প্রেম আর নিষ্ঠা।
তবে, এই বস্তুবাদের সাথে আমার মোলাকাত নয় মোকালাত ছোটবেলা থেকেই। সেই সময় সিপিএম, নকশাল আর মারক্সবাদের জয়জয়কার। আমাকেও ক্লাস নাইনে থাকতেই, ছাত্র ফেডারেশনে মেম্বার করে নিল তুষার। তুষার আর তরূণ সিপিএম বাড়ীর দুভাই। ভারী একবগগা আর কি বলে নিবেদিত প্রাণ ছিল এইসব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে। লালবাগে রতনপুর পাড়ায় ওদের বাড়ী। প্রতি রোববার ক্লাস বসত সেখানে। তুষার বলত আমাদের মতামত চাইত আমাদের চটি চটি বই দিত পড়ার জন্য, সবই মারক্সবাদের উপর। তো এইরকম এক ক্লাসে আমি জিজ্ঞেস করে বসলুম, "কমরেড ( বলতে ভারী ভালো লাগত, মনে হত যুদ্ধে যাচ্ছি) দ্বন্ধমূলক বস্তুবাদ কি?" তুষার এই বেমক্কা প্রশ্নবানে ভারী বিব্রত হয়ে পরল। ভাবতেও পারেনি এইরকমভাবে ওকে বিদ্ধ হতে হবে। আর তখন ওরই বা কত বয়স। আমাকে আড়ালে ডেকে বলল, জেনে বলবে। যা হোক পরে আর ওর অবসর হয়নি জানার বা জানাবার। তবে দুভাই ওদের রাজনৈতিক নিষ্ঠা নিয়ে একনিষ্ঠ থেকে গেছে আজও। তুষার বোধহয় পরবর্তীতে বুদ্ধদেব বসুর ঘনিষ্ট জনদের একজন হয়ে উঠেছিল আর তরুণের সাথে দুএক বছর আগে লালবাগে দেখা হয়েছিল। তখন ও লালবাগ মহকুমার সিপিএমের সম্পাদক। দুভাইই ভারী সরল সোজা। সেই অর্থে ওদের কোন ক্যারিয়ারই গড়ে ওঠেনি।
সিপিএমের কথাই যখন উঠল, আর একটু বলি। কৃষ্ণনাথ কলেজে পড়ার সময় আমাদের সন্ধ্যের অনেকটাই কাটত বহরমপুর সিপিএম অফিসের সন্ধ্যের আড্ডায়। প্রভাত দা, পল্টুদা আরো তাবড় তাবড় নেতাদের সঙ্গে আড্ডা হত। ভারী নির্ভেজাল চরিত্রের সহজ,সরল মানুষ ছিলেন এরা। আমাদের মত বাল্যখিল্যদের সঙ্গে আমাদের মত করেই মিশতেন। নেতা সুলভ কোন গুমর ছিলনা। এদের মধ্যে পল্টু বোস ছিলেন সবথেকে মাই ডিয়ার লোক। পুরু পাওয়ারের চশমাপরা তার চোখের দিকে তাকালে মনে হবে ভারী রাশভারি লোক। কিন্তু স্বভাবে শিশু। চুনট করা ধুতী, গিলে করা পাঞ্জাবি ছিল তার রোজকার পোশাক। ভারী ধোপদুরস্ত আর সৌখিন। পলটু বোসকে অনেকেই হয়ত চিনবেন। একসময় ইস্টবেঙ্গলের গোলকীপার ছিলেন। পা ভেঙ্গে যাওয়ায় খেলা ছেড়ে দেন। তার দুটো প্রিয় জিনিস ছিল, মতি সাবান আর রাধারঘাটের ভগবানের দোকানের বিড়ি। ভগবানে বিশ্বাসী না হয়েও, ভগবানের বিড়িতে তার মতি ছিল স্থির। তো এইসব রংবেরঙের মানুষজনের সঙ্গে একসময় আড্ডা মেরে কাটিয়েছি ভেবেও আজ আনন্দ জাগে।
এইযে এত কথা বললাম এর মধ্যে আসল কথাটাই অধরা থেকে গেল। দ্বন্ধমূলক বস্তুবাদ? অবশ্য গুগল খুললেই বস্তুবাদের পুরো অভিধান খুলে যাবে তার মধ্যে দ্বন্ধমূলক, ঐতিহাসিক, শ্রেণীদ্বন্ধ, বিপ্লব সবকিছুরই চটজলদি সুত্র পেয়ে যাবেন। বুঝলে বুঝবেন না বুঝলেও কোন চাপ নেই।
তবে আগেই বলেছি এই দ্বন্ধের জিতে জাতা সবুদ তো আপনার হাতের কাছেই। যাকে নিয়ে অনেক বার্ষিকী, রৌপ হয়ত সুবর্ন জয়ন্তীও পালন করেছেন। মনে কি হয়নি তাকে মূর্তিমতী দ্বন্ধময়ী বলে? তিনি ভীষণ বাস্তব আর? আর কিছু বলার সাহসই নেই আপনার। দ্বন্দ্বমূলক হলেও এই বস্তুটিকে মেনে নিতেই হবে। না নিলে আপনি আচল। দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ আসলে এগিয়ে চলার মন্ত্র। দ্বন্ধের মধ্যেই জীবন আর সেই জীবন এগিয়ে নিয়ে চলার সারথি আপনার দ্বন্ধময়ী। একান্তভাবেই আপনার। 😀😁😀
No comments:
Post a Comment